সমযোজী বন্ধনের ইলেকট্রনীয় তত্ত্ব

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - রসায়ন - রসায়ন - দ্বিতীয় পত্র | | NCTB BOOK

 

দুটি হাইড্রোজেন পরমাণুর মধ্যে দুটি ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে একটি হাড্রোজেন অণুর (H2) সৃষ্টি

সমযোজী বন্ধন (ইংরেজি: Covalent bond) হল এমন এক ধরনের রাসায়নিক বন্ধন যেখানে পরমাণুসমূহ তাদের নিজেদের মধ্যে ইলেকট্রন শেয়ারের বা ভাগাভাগির মাধ্যমে আবদ্ধ থাকে। এই ইলেক্ট্রন জোড়াগুলি ভাগ করা জোড়া বা বন্ধন জোড়া হিসাবে পরিচিত , এবং পরমাণুর মধ্যে আকর্ষণ এবং বিকর্ষণকারী শক্তির স্থিতিশীল ভারসাম্য, যখন বজায় থাকে তখন তাকে সমযোজী বন্ধন বলা হয়। ইলেকট্রন শেয়ার করা পরমাণুদ্বয়ের মধ্যেকার আকর্ষণ ও বিকর্ষণের ফলে যে সুস্থিত ভারসাম্য বল তৈরি হয় তাই সমযোজী বন্ধনের সৃষ্টি করে। অনেক অণু ইলেকট্রনের এই শেয়ারিং এর ফলে প্রতিটি পরমাণুকে একটি স্থিতিশীল ইলেকট্রনিক কনফিগারেশনের সাথে মিল রেখে একটি সম্পূর্ণ ভ্যালেন্স শেল এর সমতুল্য শক্তি অর্জন করতে সাহায্য করে। জৈব রসায়নে, সমযোজী বন্ধন আয়নিক বন্ধনের তুলনায় অনেক বেশি সাধারণ।

সমযোজী বন্ধন এদের গঠনের ধরন অনুযায়ী পাই-বন্ধন (π-বন্ধন), সিগমা বন্ধন (σ-বন্ধন),ধাতু-থেকে-ধাতু বন্ধন, অ্যাগস্টিক মিথস্ক্রিয়া,বাঁকানো বন্ধন এবং ত্রিকেন্দ্রীক দ্বিইলেক্ট্রন বন্ধন এবং ত্রিকেন্দ্রীক চার-ইলেক্ট্রন বন্ধন ইত্যাদি ধরনের হয়ে থাকে। সমযোজী বন্ধন শব্দটির প্রচলন ১৯৩৯ সাল থেকে শুরু হয়।

পরমাণুসমুহের মধ্যে সমযোজী বন্ধন তখনই গঠিত হয় যখন এদের তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান সমান বা অতি নিকটবর্তী হয়। শেয়ারকৃত ইলেকট্রন যদি দুটি পরমাণুর মধ্যে নির্দিষ্ট না থেকে অনেকগুলি পরমাণু দ্বারা শেয়ার হয়ে থাকে তখন একে ডিলোকালাইজড ইলেকট্রন বলা হয়।আর সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ যৌগ পানিতে দ্রবণীয় নয়, তবে যেসকল সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ যৌগের মৌলগুলোর তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান বেশি তারা পোলার যৌগ গঠন করে যার কারণে এরা পানিতে দ্রবণীয় হয়।

Content added By
Promotion